আজ এক মাস হল লক্ষ্মী গোয়ালে কেঁদে চলেছে।
লক্ষ্মী একবার ভাবে শিং দিয়ে ঢুসিয়ে দিয়ে চলে যায় কোথাও।যেখানে কন্যা প্রসব করার দায় থাকবে না। যা পাবে তাই খাবে। এখানে সিমেন্টে তাড়ে খোল ,কুঁড়ো ,নুন,গোখাদ্য আর গলা দিয়ে নামছে না ।ওগুলো কেমন আলুনি লাগে। খড় কাটাগুলো দেখলে তার ছেলে ননীর কথা মনে পড়ে ।ছোট্ট মুখ দুলিয়ে দুলিয়ে অনেকগুলো খড় কাটা খেয়ে নিত। লক্ষ্মী ডাগর চোখ মেলে চেয়ে থাকতো পাঁচ মাসের ননীর দিকে।ভাবত, ছেলেটার বদঅভ্যাস হচ্ছে।চোখ বন্ধ করে খাওয়া ।আমি তো আর চিরকাল তোর খাওয়ার সময় থাকবো না যে, দেখে দেবো ।কে কি খাইয়ে দেবে তার নেই ঠিক । লক্ষ্মী ভেবেছিল ননীএকটু বড় হলে নিজের গলার ঘণ্টা খানা ওকে পরিয়ে দেবে ।ননী যখন দুগ্ধ পান করবে তখন সহসা বেজে ওঠে বাৎসল্যরস সৃষ্টি করবে। এখন ঘন্টার শব্দ লক্ষ্মীর মোটেই ভালো লাগেনা। ননীর সেই ডাকে আজও কানে বাজে।
গৃহস্বামীর সংসারে নাকি টানাটানি চলছে ,একথা লক্ষ্মী শুনেছিল অনেক দিন আগে। ননীর ভাগের দুধটুকু উজাড় করে দিয়েছিল। হঠাৎ, একদিন দেখতে এল এক মানুষ । আর ননীকে নিয়ে চলে গেল ।ননী তখন দুধ খাচ্ছিল ।ঠোঁটের কোণে সাদা ফেনা লেগে রয়েছে। লক্ষ্মী আকুল হয়ে কাঁদলো। ননীর মানুষটার হাত ফসকে বারবার ছুটে চলে এলো লক্ষ্মীর কাছে। কিন্তু পাষাণে কবে ফুল ফুটেছে বলতে পারেন?