মা

বুধুয়ার আজ এক সপ্তাহ জ্বর।



কোন কাজ করতে পারে না। মাঠের পাকা ফসল পড়ে রইলো নির্লিপ্ত ভাবে। বুড়ো হাড়ে জোর কমেছে, বেড়েছে বাতের জোর। বাড়ীতে বুধুয়া একা একেবারে একাকার। দোচালা বাড়ীটা কেমন অসুস্থতার ছাপ বহন করে চলেছে। তবে সামনের বুড়ো বটগাছটার কোন অসুখ নেই ।বুধুয়া অসুস্থ শরীর নিয়ে রোজ এক বালতি জল ঢেলে আসে। এই জল দেওয়াতে কোনো কৃপণতা নেই।


এতদিন লক্ষ্য করেনি ।আজ সুস্থ বোধ হওয়াতে ঘটনাটা বেশ অবাক করে ।কেউ বা কারা যেন বুধুয়াকে না জানিয়ে রাতে খাবার রেখে যায়! জানলার সামনে বসে পথ চলতি সবাইকে জিজ্ঞাসা করে কে খাবার দিয়ে যায়। কোন উত্তর মেলে না।

আজ পূর্ণিমা। আকাশে মস্ত বড় চাঁদ। সামনের বটগাছটা জোছনায় ভেসে যাচ্ছে। বুধুয়া জানলার সামনে বসে তাই এক মন দিয়ে দেখে চলেছে ।পুরোনো, হারানো, ফেলে আসা কত কি মনে পড়ছে। ভাবছে এই সমাজ তার মতো এখনো অসুস্থ হয়ে যায়নি ।সমাজের সুস্থতা কামনা করতে করতে হঠাৎ দেখলে বটগাছটা এগিয়ে আসতে থাকে। বাড়ির কাছে এসে একটা ডালা বাড়িয়ে খাবার রেখে দিল দরজার সামনে। বুধুয়ার গালের কোঁকড়ানো চামড়ার ভাঁজে ভাঁজে গরম নোনা জল এসে জমছে অবলীলায়।শান্ত অস্ফুট স্বরে বুধুয়া বললো- মা।

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Ok, Go it!