শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে ব্রততীকে দেখে আমি খুব অবাক হলাম।
মেয়েটাকে আমি চিনি কলেজ থেকে। শান্ত,নম্র, লাজুক স্বভাবের ।মেসে আমার রুমমেট হয়ে এসেছিল। স্বজন ,ঘর ছেড়ে দূরে থাকা মেয়েটা ক্রমে বলেছিল তার কথা । ছোটোবেলার কথা, বাবা মার কথা, বলেছিল কি করতে ভালো লাগে, কি পড়তে ভালো লাগে। বিষ্ময় জেগেছিল তার ভালোবাসার কথা শুনে!
কাকে যেন ভালোবাসে ….হ্যাঁ মনে পড়েছে সত্যচরণকে। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলাম -”আরন্যক উপন্যাসের সত্যচরনকে?” ব্রততী উপর নীচ মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানিয়েছিল। আমি হেসে বলেছিলাম -”যা এ আবার হয় নাকি ।নোবেলের চরিত্ররা নোবেলের জগতেই থাকে ।কোনদিন তারা লাইব্রেরী, বইয়ের তাক ছেড়ে আসে না ।তুই পৃথিবীর বাইরে যেতে পারবি না, যদিও যাস নানান অসুবিধা সম্মুখীন হবি। আর তারা যদি আসে প্রাণে বাঁচবে না।” ব্রততী বলেছিল-” আমি বাঁচিয়ে রাখবো, ভালোবাসবো ,যত্ন করব…….”
-”যা, গল্পের বই পড়ে পড়ে কল্পনার জগতে চলে গেছিস ।
ব্রততী একটু হেসেছিল।
আমি বাসের জানালা দিয়ে ওকে দেখছি আর পুরনো কথা ভাবছি। এমন সময় দেখলাম দুজন মহিলা ব্রততীকে জোর করে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। যে গাড়িতে তুলল তার নাম-” মনের খোঁজ অ্যাসাইলাম সার্ভিসিং সেন্টার”।