পরামর্শ

পাড়ায় পর পর তিনটে মৃত্যু হল।


লোচন দুটো বুড়ো আর একটা বুড়িকে মরত দেখেছে স্বচোখে। দিনের বেলায় ভয় করে নি, সমস্যাটা হচ্ছে রাতে। টিউশনটা বাড়ী থেকে এত দূরে যে, সমস্যা হওয়ারই কথা। সারাদিন চারিদিকে ঘুরে বেড়িয়ে টিউশনের সময় হলে মনটা কেমন যেন করে ওঠে।



এই সমস্যার কথা বড়দের বলা যায় না। এমন কাউকে বলতে হবে যে বড় নয় তবে হাবেভাবে, কথাবার্তায়, চালচলনে হবে বড়দের সমান। লোচন অনেক ভেবে চিন্তে পাড়ার লাল্টুদার কাছে কথাখানা পেড়েই বসল।

লোচন জ্ঞান হওয়া থেকে শুনে আসছে লাল্টুদা নাকি অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। অষ্টম শ্রেণীটাই অষ্টরম্ভা না পড়াশোনাতে অষ্টরম্ভা লোচন আজ ও বুঝে উঠতে পারে না। লাল্টুদা সপ্তাহে দুদিন স্কুলে যেত।বাকী দিন গুলো নাকি ছুটি নেয়। লোচন ও পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে ঐ একই স্কুলে।কই, তাকে তো কেউ ছুটে নিতে বলে না।হ্যাঁ, একবার মাকে বলেছিল -ছুটি নেবে। এমন ধোলাই দিয়েছে, জন্মে অব দি খায়নি। মার খাওয়ার কথাটা শুনে লাল্টুদার সেকি হাসি।লোচনের গা যে জ্বলেনি এমনটা ও নয়। পরামর্শদাতারা অমনটা হয়ে থাকে।

           লোচনের গুরুতর সমস্যার কথা শুনে লাল্টুদা একচোট হেসে নিয়ে বলল- আরে লোচনা, তুই ভুতের ভয় পাচ্ছিস?
সেই গোধূলির বৈঠকে পচা,গজা, রামু,ভীমা, কেষ্টা সবাই উপস্থিত ছিল। লোচন সবার দিকে চেয়ে দেখল সবাই হাসছে। লোচন লাল্টুর কাছ ঘেঁষে বসে কেঁদে বলেছিল - অমন করে হেসো না। রাতে টিউশন তো পড়তে যাও না, তাই হাসছো। গেলে বুঝতে কী ভয় পায়! লাল্টু লোচনের পিঠ চাপড়ে বলল-ভয় পাস নেই, তুই না পুরুষ মানুষ ।শোন ব্যাগে এক প্যাকেট বিড়ি, একটা মদের বোতল আর দোক্তা‌পান রাখবি,কেমন।
লোচনের ঝাঁ করে মনে পড়ল,ও তাই তো! এই কথাটা একবারে ও মনে আসেনি। একজন বুড়ো মদ খেয়ে জলে ডুবে মারা গেছেন।আর একজন বুড়ো খুব বিড়ি খেতেন।বুড়িটা প্রচুর পরিমাণে দোক্তা পান খেতেন ।

যদি রাস্তা আটকায়, সঙ্গে থাকলে যে যারটা বুঝে নেবে!

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Ok, Go it!