জন্মাষ্টমী

 সনাতনী সাতমহলা বাড়িতে অর্থের প্রাচুর্যে ভরপুর।এতটাই প্রাচুর্যের গাঢ় প্রলেপ মাখানো যে এক চিলতে আলো হৃদয় মেলতে পারে না। 


সুকেতু আর সনাতনীর ভরা সংসারে আর চাওয়ার কিছুই নেই ।ভগবানকে না ডাকলেও চলে তবুও বছরে একবার ধুমধাম করে জন্মাষ্টমী পালন করে চোখের জলে বুক ভাসিয়ে।



আজ জন্মাষ্টমী।

 বাড়িতে অনেক কাজ। সনাতনী বাড়ির ঠাকুরদালানে দাঁড়িয়ে তারই তদারকি করছে।সুকেতু নিজের হাতে গোপালের সাজ পোশাক পরাচ্ছে আর বলছে-” প্রভু তুমি এসো আমার ঘর আলো করে।” এমন সময় কে যেন বলে উঠল-” মা ঠাকুরন ,আমার বাবা কোথায় বলতে পারেন?
সনাতনী মুখ ফিরিয়ে বলল -”কে তোমার বাবা ?”
-’কাশীনাথ, কাশীনাথ দাস।”
-” তুমি তার মেয়ে বুঝি ।”
সনাতনীর এই প্রশ্ন শুনে সুকেতু বাঁশি, গোপালের হাতে দিয়ে বলল _”কাশীনাথ তো আমাদেরই মতো নিঃসন্তান, ওর আবার সন্তান আসবে কোথা থেকে !”
-”তাহলে এই বছর চারেক মেয়েটি কি বলছে?”
 সনাতনী কথাটা বলে পিছন ফিরে তাকাতেই দেখল কাশীনাথ নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে। সনাতনী বলল -”
এ কে কাশীনাথ?”
-”আজ্ঞে মা ঠাকুরন, আপনাদের দয়াতে এই গরীব হতভাগা বাবার ভাঙ্গা ঘর আলো করা আমার মেয়ে ।”
-”তোমার মেয়ে!”
-”হ্যাঁ মা, আমার তো আর সন্তান হলো না। তাতে কি হয়েছে ।আমাদের সমাজে এদের মতো কত ফুটফুটে সন্তান অনাদরে অবহেলায় বড় হচ্ছে।একটু ভালোবাসা.….. আমার তো আর অত সামর্থ্য নেই যে সবাইকে দেখব ।তাই দুজনকে নিয়ে এলাম। আপনাদের এখানে কাজ করে আমাদের নুন ভাত জুটলে এদের ও জুটবে।”
-”আরেকজন কোথায়?”
 কাশীনাথ ফটকের দিকে দেখিয়ে বলল-” ওই যে আমার গিন্নি সরমা ,গোপালকে কোলে নিয়ে এখানেই আসছে ।”

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Ok, Go it!